প্রশ্ন
জেহাদ কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জেহাদের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। তবে পারিভাষিক অর্থে ইসলামে জেহাদ দুই প্রকার। ১. ইকদামী জেহাদ তথা আক্রমণাত্মক জেহাদ। ২. দেফায়ী জেহাদ তথা প্রতিরক্ষামূলক জেহাদ।
প্রতিরক্ষামূলক জেহাদ:
কোনো ব্যক্তি, দল, বা রাষ্ট্র যদি কোনো মুসলিম রাষ্ট্রের উপর আক্রমণ করতে আসে তখন তাদেরকে প্রতিহত করা, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা রাষ্ট্রের সকলের উপর ফরজ হয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে সেই ফরজ দায়িত্ব আশেপাশের মুসলিমদের উপরও চলে আসে।
একটা সময় পর্যন্ত ইসলামে এ ধরনের জেহাদের অনুমতি ছিলো না। বরং ধৈর্য ধারণের প্রতিই মুসলমানদের আদেশ দেয়া হতো। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করলেন-
أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ (39) الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ إِلَّا أَنْ يَقُولُوا رَبُّنَا اللَّهُ
‘যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে; কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আর আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম। তারা সে সমস্ত লোক যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে; তাদের একমাত্র অপরাধ এই যে, তারা বলে, আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ।’ [সূরা হাজ্জ, আয়াত : ৩৯-৪০]
আক্রমণাত্মক জেহাদ:
অমুসলিম রাষ্ট্রে ইসলামী শারীয়াহ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বাধ্য হয়ে যে জেহাদ পরিচালনা করতে হয় তাকে বলা হয় ইকদামী জেহাদ।
ইসলাম দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ধর্ম। একমাত্র ইসলামই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য ধর্ম।
ইরশাদ হচ্ছে-
إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ
‘নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য একমাত্র ধর্ম।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯
এছাড়া অন্য কোনো ধর্ম আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।
তাই ইসলাম চায়, দুনিয়াতে সকল মানুষ এই শান্তির ধর্ম ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিক।
এ জন্য ইসলাম তার অনুসারীদেরকে আদেশ করে, যেন তারা দুনিয়াতে সকল মানুষকে শান্তি ও নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টন করে রাখে। সকলকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টা ব্যয় করে।
আর যারা এ শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাদেরকে যেন তারা নির্মূল করে। তাই কখনো কখনো এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে শায়েস্তা করার জন্য আক্রমণাত্মক জেহাদও পরিচালনা করতে হয়।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/3294/article-details.html