প্রশ্ন
পত্রিকা দেখে সাধারণত আমরা সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকি। ফিতরার পরিমাণ সম্পর্কে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চাই। তা কি খাদ্য দিয়েই দেয়া বাধ্যতামূলক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
সদাকায়ে ফিতরের পরিমাণ সম্পর্ক হাদিসে মোট পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। যথা-যব, খেজুর, পনির, কিসমিস ও গম।
হাদিস শরিফে বলা হয়েছে-
أدوا عن كل حر وعبد صغير أو كبير نصف صاع من بر أو صاعا من تمر أو صاعا من شعير
অর্থ: ‘তোমরা প্রত্যেক স্বাধীন ব্যক্তি এবং গোলামের (ছোট কিংবা বড়) পক্ষ থেকে আধা সা’ গম অথবা এক সা’ খেজুর কিংবা এক সা’ যব আদায় কর।’ [সুনানুত দারাকুতনি, হাদিস: ২১৩৬]
যব, খেজুর, পনির ও কিসমিস এর ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য যে কোনো একটির এক সা’ (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) পরিমাণ কিংবা তার বাজার মূল্যের সমপরিমাণ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।
আর গম এর ক্ষেত্রে আধা ‘সা’ (প্রায় ১ কেজি ৭৫০ গ্রাম) পরিমাণ গম কিংবা তার বাজার মূল্যের সমপরিমাণ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে।
এক সা’ এর পরিমাণ সর্বনিম্ন ২ কেজি ৪০০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৩ কেজি ৩৩০ গ্রাম হওয়ার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। মতপার্থক্যের ভুল ভ্রান্তি থেকে বাঁচা এবং গরিবের উপকারের দিক বিবেচনা করে আমরা এখানে ১ সা’ = ৩ কেজি ৩৩০ গ্রাম ধরেছি।
আপনার সুবিধার জন্য উক্ত খাবারগুলোর তুলনামূলক বাজারমূল্য উল্লেখ করা হলো।
(ক) উন্নতমানের আজওয়া খেজুরের মূল্য প্রতি কেজি ১০০০/- টাকা। এ বিবেচনায় একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩২৫৬/- তিন হাজার দুই শত ছাপ্পান্ন টাকা।
(খ) মধ্যম ধরনের খেজুরের মূল্য প্রতি কেজি ৩০০/- টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৭৭/- নয়শত সাতাত্তর টাকা।
(গ) কিসমিস প্রতি কেজি ২৩০/- টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৪৮/- (সাত শত আটচল্লিশ) টাকা।
ঘ) পনির প্রতি কেজি ৫০০/- টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬২৮/- (এক হাজার ছয় শত আটাশ) টাকা।
ঙ) গম প্রতি কেজি ৩৫/- টাকা। এক্ষেত্রে একজনের সদকায়ে ফিতরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৭ টাকা।
হাদিসে এ ৫টি দ্রব্যের যেকোনোটির দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যেন মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যেকোনো ১টি দ্বারা তা আদায় করতে পারে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1478/article-details.html